অস্ত্রবিরতির দায়িত্ব নিয়েছেন পুতিন

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়ায় সাম্ভাব্য অস্ত্রবিরতির সমন্বয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজ শুক্রবার গার্ডিয়ান অনলাইনে প্রকাশিত খবরে জানানো হয়, পুতিন চলতি সপ্তাহে সিরীয় অস্ত্র বিরতিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার প্রচেষ্টার সমন্বয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং বিমান হামলার সংখ্যা হ্রাস করতে রুশ সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবরে জানানো হয়।

এদিকে সিরিয়ায় অস্ত্র বিরতি প্রচেষ্টাকে সফল করতে জাতিসংঘের নেতৃত্বে গঠিত সমন্বয় কমিটির রুশ প্রতিনিধি সের্গেই বেলেস্কভ বলেছেন, পুতিন অস্ত্র বিরতি প্রচেষ্টায় সমর্থন আদায়ে এবং অস্ত্র বিরতির জটিল বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করতে ইরান, সৌদি আরব, ইসরায়েল ও সিরিয়ার নেতাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই ফোনে কথা বলেছেন। তিনি একটি বহুজাতিক সমন্বয় কেন্দ্রও খুলেছেন, যেখানে বিবদমান পক্ষগুলো অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘিত হওয়ার সুনির্দিষ্ট ঘটনা সম্পর্কে অভিযোগ পাঠাতে পারবে। এ ছাড়া সিরিয়ার কয়েকটি সশস্ত্র গ্রুপ এরই মধ্যে অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়।

Read More News

তবে যুদ্ধবিরতির দায়িত্ব নিয়ে রাশিয়া অভিযোগ করেছে, সিরিয়ায় সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নস্যাতের চেষ্টা করছে আমেরিকা।  রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মস্কোয় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমেরিকার কোনো কোনো কর্মকর্তা চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোর ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়ে যুদ্ধবিরতির এ চুক্তির বিষয়ে অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতা চালাচ্ছে। জাখারোভা জানান, রাশিয়া এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলেও মার্কিন কিছু কর্মকর্তা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

মারিয়া জাখারোভা আরো বলেন, মার্কিন কোনো কোনো কর্মকর্তার এমন তৎপরতার পরও যুদ্ধবিরতির বিষয়টি এগিয়ে চলেছে এবং এ নিয়ে মার্কিন প্রশাসন সক্রিয় রয়েছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধারাদের অবশ্যই যুদ্ধবিরতির অংশ করতে হবে। সিরিয়ার বাস্তবতা তেমনটিই বলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বুধবার তিন ঘণ্টার মধ্যে পুতিন ফোনে সৌদি বাদশা সালমান, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানী, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আর আসাদ এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেছেন। আলোচনায় বিশ্বনেতারা পাঁচ বছর ধরে চলমান ওই গৃহযুদ্ধের অবসান যে সামরিক উপায়ে সম্ভব নয় এ কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।

এর আগে গত সোমবার রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে একমত হয় এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তা কার্যকরের একটি খসড়া প্রস্তাবে স্বাক্ষর করে। কিন্তু তার পরের দিনই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেন, সিরিয়া সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ব্যর্থ হলে আমেরিকার হাতে থাকা ‘বি প্ল্যান’কে তখন কাজে লাগানো হবে। এখানে বি প্ল্যান বলতে কেরি সিরিয়ায় সামরিক হামলার কথা বলেছেন বলে ব্যাখ্যা করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *