দেশের প্রথম হেলিপ্যাডযুক্ত লঞ্চ ঝালকাঠিতে আগুনে পুড়ে গেছে। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে নগরীর দপদপিয়া ডকইয়ার্ডে ‘অ্যাডভেঞ্চার-৬’ নামে অত্যাধুনিক এই যাত্রীবাহী লঞ্চে আগুন লাগে।
পরে প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে বরিশাল ও ঝালকাঠির ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিটের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। কিন্তু ততক্ষণে পুরো লঞ্চটি আগুনে পুড়ে যায়।
আসন্ন ঈদুল ফিতরে ঢাকা-বরিশাল রুটে যাত্রী পরিবহনের উদ্দেশ্যে দপদপিয়া ডকইয়ার্ডে এই লঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। তিনতলাবিশিষ্ট লঞ্চটিতে হেলিপ্যাডসহ অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা ছিল বলে জানিয়েছেন লঞ্চের মালিক ও বরিশাল মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন মৃধা।
Read More News
লঞ্চের মালিক আরো বলেন, ষড়যন্ত্র করে আমার লঞ্চে আগুন লাগানো হয়েছে। এতে লঞ্চটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ঈদ সামনে রেখে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে বিশেষ সার্ভিসে যুক্ত করার কথা ছিল অ্যাডভেঞ্চার-৬। কীর্তনখোলা নদীর দপদপিয়া পয়েন্টে নিজস্ব ডকইয়ার্ডে জাহাজটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল। লঞ্চটি নির্মাণে ১৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু লঞ্চের মালিকপক্ষের দাবি, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, শত্রুতা করে কেউ লঞ্চটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন।
শিপিং কর্তৃপক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নিজাম শিপিং লাইন্সে অ্যাডভেঞ্চার ৫ ও ৬ নামে দুটি লঞ্চের (ওয়াটার বাস) নির্মাণকাজ চলছিল। অ্যাডভেঞ্চার ৫ লঞ্চটির নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। আর পুড়ে যাওয়া অ্যাডভেঞ্চার-৬ লঞ্চটিরও ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ঈদের আগেই লঞ্চ দুটি বরিশাল-ঢাকা নৌপথে চলাচল শুরু করার কথা ছিল।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে কাজ শেষে শ্রমিকরা নামাজ পড়তে যান। কিছুক্ষণ পরেই বিকট শব্দে প্রকম্পিত হয় দপদপিয়া এলাকা। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
আগুন জ্বলতে দেখে স্থানীয় লোকজন নদী থেকে পানি এনে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে বরিশাল ও নলছিটি থেকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করেন। এ সময় পুরো এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসীর সহায়তায় প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ততক্ষণে পুড়ে যায় তিনতলাবিশিষ্ট লঞ্চটি।