আজ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত।
মহিমান্বিত এ রজনীতে মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশ্বের মুসলমানগণ বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া করবেন।
যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আজ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দেশব্যাপী পালিত হবে ক্ষমার ও সৌভাগ্যের রজনী পবিত্র শবেবরাত।
মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, হিজরি সাবান মাসের ১৫ তারিখ রাতে শবে বরাতে আল্লাহ আগামী বছরের ভাগ্য নির্ধারণ করেন। এই রাতে তিনি তার সৃষ্টি জগতের সবার অতীতের কর্মকাণ্ড আমলে নিয়ে আগামী বছরের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করেন।
Read More News
ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এই রাতে মানবজাতির জন্য স্রষ্টার অশেষ কল্যাণ কামনা করে বিশেষ নামাজ, কোরআন পাঠ, জিকির ও অন্যান্য ধর্মীয় ইবাদত পালন করেন। তারা পুরো রাতই ইবাদতের মাঝ দিয়ে অতিবাহিত করেন।
এ লাইলাতুল বারাআতে নিহিত রয়েছে মুমিন-মুসলিমের মুক্তি ও কল্যাণের বিভিন্ন উপকরণ। তাই এ রাতকে বলা হয়েছে লাইলাতুল বারাআত বা মুক্তির রাত। অন্যদিকে পবিত্র মাহে রমজানের পূর্বের মাস হওয়ার কারণে শাবান মাসকে বলা হয়েছে রমজান শরীফের প্রস্তুতির মাস।
লাইলাতুল বারাআতের অনেক তাৎপর্য, ফযীলত ও বরকত রয়েছে। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেন শাবান মাস হল আমার মাস আর পবিত্র রমজান মাস হল মহান আল্লাহ তাআলার মাস। তিনি আরও বলেন, তোমরা শাবানের চাঁদ সঠিকভাবে হিসাব রাখ। কেননা শাবানের চাঁদের হিসাব ঠিক হলে, রমজানের চাঁদের হিসাব সঠিক হতে সহায়ক হবে।(মিশকাত শরীফ-১১৫পৃ)
শা’বান মাসের ১৪তম তারিখের দিবাগত রাত হচ্ছে লাইলাতুল বারাআত বা শবে বারাআত। লাইলাতুল বারাআত হচ্ছে গুনাহ থেকে মুক্তি লাভের রাত্রি। অর্থাৎ, এ রাত্রে ইবাদত বন্দেগী করার মাধ্যমে মুমিন মুসলামনদের গুনাহ মাফ হয়ে থাকে এবং মর্যাদা বৃদ্ধি হয়ে থেকে।
শা’বান এবং শবে বারাআতের করণীয় সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেন, শাবান মাসের রোযা আমার নিকট অন্য মাসের তুলনায় অধিক প্রিয়। যখন তোমাদের নিকট শাবানের রাত্রি উপস্থিত হবে, তখন তোমরা সেই রাতটি জাগ্রত থাক (নামাজ পড়ে, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করে, তাসবীহ পড়ে, যিকির করে, দুআ করে) এবং দিনের বেলা রোযা রাখ।
এ রাতে মহান আল্লাহ সূর্যাস্তের পর থেকে ফজর পর্যন্ত দুনিয়ার আসমানে তাশরীফ আনেন এবং তিনি ঘোষণা করে- আমি তার গুনাহ সমূহ মাফ করে দিব। আমি তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করব। এভাবে পূর্ণ রাত মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা হতে থাকে এবং বান্দাদের উপর রহমত বৃষ্টির ন্যায় নাজিল হতে থাকে।
এছাড়া, এ রাতে মুসলিমরা নিজেদের আত্মীয় ও ধর্মীয় আলেমদের কবর জিয়ারত এবং সেই সাথে গরিব, প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনদের মাঝে মিষ্টি ও ঘরে তৈরি খাবার বিতরণ করেন।