আজ ৮ মার্চ। বিশ্ব নারী দিবস। নারীর সামাজিক অধিকার ও আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং স্বীকৃতি আদায়ের দিন।
তবে এ দিবসে ধর্ম বিদ্বেষী, উগ্রপন্থি, বিতর্কীত ও নির্বাসিত নারীর অধিকার আদায়ের দাবিদার লেখিকা তসলিমা নাসরিন গোপনাঙ্গের দুর্গন্ধ প্রসঙ্গ টেনে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনের লিংক দিয়ে নারী-পুরুষের গোপনাঙ্গের দুর্গন্ধ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেছেন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে।
তসলিমা জীবনে অনেক পুরুষের গোপনাঙ্গের দুর্গন্ধ নিয়েছেন দাবি করেন এতে। তবে কত পুরুষের গোপনাঙ্গের দুর্গন্ধ নিয়েছেন এর প্রকৃত সংখ্যা উল্লেখ করেননি তার স্ট্যাটাসে।
Read More News
এর আগে অপর একটি স্ট্যাটাসে নতুন প্রেমিকের প্রত্যাশায় শিবরাত্রীতে শিবলিঙ্গে জল ঢেলেছেন তসলিমা।
সে যাই হোক, নারী-পুরুষের গোপানাঙ্গের সুগন্ধ বা দুর্গন্ধের মধ্যেও তিনি খুঁজে পেয়েছেন নারী-পুরুষের বৈষম্য! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া তসলিমা নাসরিনের স্ট্যাটাস দু’টি নিম্নে হুবহু দেয়া হলো-
‘হঠাৎ চোখে পড়লো আনন্দবাজারের একটি খবর। ৭ মার্চে ছাপা হওয়া খবর। পরদিন ৮ মার্চ। নারীদিবস। তা খবরটার শিরোনাম কি? শিরোনাম ‘মহিলাদের গোপনাঙ্গের দুর্গন্ধের ৮ টি কারণ’। নারীদিবসে নারীদের জন্য পুরুষের প্রতিষ্ঠান থেকে চমৎকার এক উপহার বটে!’
‘সেই আদিকাল থেকে পত্রিকায় ম্যাগাজিনে পড়ে আসছি, রেডিও টিভিতে শুনে আসছি মহিলাদের গোপনাঙ্গে নাকি বিষম দুর্গন্ধ। এই দুর্গন্ধ দূর করতে পুরো মানবজাতি আদা জল খেয়ে লেগেছে। কত রকমারি কারণ যে বের করা হচ্ছে দুর্গন্ধের! কত রকমারি সমাধানও বের করা হচ্ছে! যোনীর ন্যাচারাল গন্ধকে ‘দুর্গন্ধ’ নামে ডাকা হয়। এই গন্ধ বিদেয় করতে কত যে ক্ষতিকর কেমিক্যাল বাজারে আনা হয়েছে!’
‘কেউ শুনেছে পুরুষাঙ্গের দুর্গন্ধের কথা? আমি তো এ যাবৎ যত পুরুষাঙ্গ দেখেছি, সবগুলো থেকে দুর্গন্ধ বেরিয়েছে। দুর্গন্ধে আমার বমি আসে আসে অবস্থা হয়েছে। পুরুষাঙ্গের দুর্গন্ধ নিয়ে কেন মিডিয়াতে লেখালেখি, বলাবলি হয় না? কেন গবেষণা হয়না কী কী কারণে পুরুষের গোপনাঙ্গে দুর্গন্ধ হয়, কী করে ওদের বিচ্ছিরি দুর্গন্ধ দূর করা যায়, এসব নিয়ে!’
‘নারীকেই চিহ্নিত করা হয় ডাইনি বলে, অপয়া বলে, নরকের দ্বার বলে, নোংরা আর দুর্গন্ধের আধার বলে। যেন নারীরা লজ্জায় সংকুচিত হয়, ভয়ে সিঁটিয়ে থাকে, যেন আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, যেন নিজেকে ঘৃণা করতে শেখে।’
এর আগের স্ট্যাটাসে তললিমা লিখেছেন, ‘দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র প্রেমিক আমার। তা আমার সবেধন প্রেমিকমণিটি ভালো করে আই লাভ ইউও বলতে পারে না। নামকাওয়াস্তে একটা প্রেমিক আছে। থাকতে হয় বলেই আছে। প্রেমিকের সঙ্গে কদাচিৎ দেখা হয়। চুমু টুমু খেতে চাই, শুতে চাই– প্রেমিক অন্যত্র ব্যস্ত। এভাবে আর পোষাচ্ছে না। এদিকে প্রেমিক চাই বিজ্ঞাপনটাও দিতে পারছি না। রাক্ষস খোক্কস কী না কী জোটে কে জানে। আজ সকালে বিছানায় গড়াচ্ছি, তখনই শুনি আজ শিবরাত্রি। ভাবি শিবলিঙ্গে দু’লিটার দুধ ঢেলে এলে কেমন হয়! শিবলিঙ্গে দুধ বা জল ঢাললে নাকি ভালো পাত্তর জোটে। আমার তো বিয়ের বাসনা নেই। একটা ডেডিকেটেড প্রেমিক পেলেই আমার চলবে। যেই ভাবা সেই কাজ। বাড়ির কাছেই এক মন্দির। পুজো হচ্ছে, প্রচণ্ড ভিড়। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে পুজো দেখলাম। তারপর সোজা শিবলিঙ্গের কাছে চলে গেলাম। দুধ পেলাম না, হাতের কাছে জল ছিল, জলই ঢেলে এলাম। কী চাই? আই লাভ ইউ বলতে জানে এমন একটা খুবসুরত প্রেমিক।
ভগবানে বিশ্বাস নেই, আল্লায় তো নেই-ই, ওদিকে যে কয়েক হাজার ঈশ্বরের জন্ম হয়েছে যুগ যুগ ধরে, ওসবের একটিতেও বিশ্বাস নেই। তাহলে কেন আমি ভাবছি শিবলিঙ্গে জল ঢাললে ভগবান শিব আমাকে একখানা প্রেমিক জোগাড় করে দেবে? হয়তো দেবে না। কিন্তু দিতে পারে কি না, একটু বাজিয়ে দেখলে ক্ষতি কী! যদি প্রেম করার জন্য মনের মতো একটা পাত্র পেয়ে যাই দু’চারদিনের মধ্যে, তা হলে তো ভেবেই নিতে হবে শিব বলে কিছু না কিছু কোথাও ছিল বা আছে। শুধু শিব নয়, আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ পেলে তো আল্লাহকেও বিশ্বাস করতে শুরু করবো।’