হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদের বিয়ের পর থেকে চলছে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এখনো সরগরম নানা বিশ্লেষণে।
গুলতেকিন আর হুমায়ূন আহমেদের বয়সের তফাত অনেক বেশি ছিল। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের প্রতি গুলতেকিনের ভালোবাসা ছিল খাঁটি। হুমায়ূন আহমেদ যখন পিএইচডির জন্য আমেরিকায় ছিলেন তখন ভালোবাসার টানেই গুলতেকিন সন্তানসম্ভবা অবস্থাতেই বিদেশে পাড়ি জমায়।
সেই সময় গুলতেকিন হয়তো ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থী ছিলেন। এ ছাড়া হুমায়ূন আহমেদের আজ নন্দিত কথাসাহিত্যিক হওয়ার পেছনেও গুলতেকিন ওতপ্রোতভাবে জড়িত বিশেষ করে আর্থিকভাবে।
হুমায়ূন আহমেদ তার কোনো একটি গল্পের বইয়ে লিখেছিলেন যে, “পৃথিবীতে দুই ধরনের মানুষ খুন হয়। অতি ঘৃণার মানুষ আর অতি ভালোবাসার মানুষ।”
Read More News
গুলতেকিন আহমেদের ক্ষেত্রে হয়তো শেষের উদাহরণটাই বেশি খেটেছিল। কারণ অতি ভালোবাসার মানুষ যখন বিশ্বাসঘাতকতা করে তখন অপরজনের কাছে বাস্তবে না হলেও মনের ভিতর খুন হয়ে যায়।
এজন্যই হয়তো বিবাহবিচ্ছেদের পর গুলতেকিন কখনোই হুমায়ূন আহমেদকে নিজের থেকে দেখতে আসেনি এমনকি তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতেও। কারণ হুমায়ূন আহমেদ তো অনেক আগেই গুলতেকিনের কাছে মৃত।
যাই হোক, সেই কঠিন সময়টা গুলতেকিন অনেকটাই পার করে ফেলেছেন। এখন না আছে সন্তানকে প্রতিষ্ঠিত করার তাড়া, না আছে নিজের নামের পাশে ডিভোর্সি শব্দটি। গুলতেকিন যেমন আগেও গুলতেকিন আহমেদ ছিলেন, এখনো গুলতেকিন আহমেদই হয়েছেন। আর শাওন হয়ে গে ল দ্য ওয়াইফ অব লেট হুমায়ূন আহমেদ।
প্রথমেই বলেছি প্রকৃতি কখনোই নিজের কাছে কোনো ঋণ রাখে না। জীবনটা হচ্ছে অনেকটা প্রতিধ্বনির মতো। তুমি জীবনের সাথে যা করবে ঠিক সেই জিনিসটাই তোমার কাছে ফিরে আসবে। তাই সময়কে সময় দিতে হবে। সময়ই উপযুক্ত জবাব দিবে।
যে নিঃসঙ্গতায় একদিন গুলতেকিন আহমেদ ভুগেছিল, ঠিক সেই সময়টাই শাওন এখন হুমায়ূন আহমেদের সেই সাধের পনেরশো স্কয়ার ফিটের দখিনা হাওয়াতে পার করছে এবং সেটা অনেক অল্প বয়সেই।
গুলতেকিন আহমেদের এই সিদ্ধান্তকে হয়তো অনেকেই বাঁকা চোখে দেখছে, কারণ হুমায়ূনরা একাধিক বিয়ে করলেও সবাই বাহবা দেয়, কিন্তু গুলতেকিনরা সেটা করলে ধিক্কার জানায়।
অনেকেই বলছেন এবার হুমায়ূনের দ্বিতীয় স্ত্রী অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনেরও বিয়ে করা উচিত। কিন্তু শাওনের পক্ষে তা হয়তো সম্ভব হবে না। কারণ, তার সন্তানেরা এখনো নাবালক, দ্বিতীয়ত বিয়ে করলে হুমায়ূন আহমেদের সব সহায়-সম্পত্তির অধিকার থেকে তিনি বঞ্চিত হবেন। তিনি এমন অমানবিক ও ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই নিবেন না।
মেহের আফরোজ শাওন সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক টিভি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি দ্বিতীয় বিয়ের কথা কখনোই ভাবতে চান না। কারণ তিনি মনে করেন, ‘হুমায়ূন মারা যাননি, সব সময় তার চারপাশে ছায়া হয়ে আছেন।’