সাবেক প্রধান বিচারপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা লতিফুর রহমান রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক এই বিচারপতির মৃত্যু হয়। লতিফুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগসহ নানা বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।
সাবেক এই বিচারপতির মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মৃত্যুর পর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
১৯৩৬ সালের ১ মার্চ যশোর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন লতিফুর রহমান। তাঁর বাবা খান বাহাদুর লুৎফর রহমান ছিলেন আইনজীবী ও রাজনীতিক। যশোর জেলা স্কুল ও ঢাকা কলেজের শিক্ষা পর্ব শেষ করে তিনি যথাক্রমে ১৯৫৫ ও ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
Read More News
চাকরিজীবনের শুরুতে লতিফুর রহমান ঢাকায় কায়েদে আজম কলেজ (বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ) এবং জগন্নাথ কলেজে ইংরেজি সাহিত্যের প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬০ সালে সাবেক এই প্রধান বিচারপতি ঢাকা হাইকোর্টে আইন পেশা পরিচালনার জন্য তালিকাভুক্ত হন। ১৯৭৯ সালে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে অতিরিক্ত বিচারক নিযুক্ত হন। স্থায়ী বিচারক হিসেবে তিনি ১৯৮১ সালে শপথ গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৯১ সালের ১৫ জানুয়ারি লতিফুর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন এবং ২০০১ সালের ১ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
সংবিধান অনুযায়ী লতিফুর রহমান ২০০১ সালের ১৫ জুলাই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তাঁর ব্যবস্থাপনায় ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে তিনি ২০০১ সালের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দিনগুলি ও আমার কথা’ নামে বইতে লতিফুর রহমান তাঁর প্রশাসনের ৮৭ দিনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
জীবনের শেষ দিনগুলো ধানমণ্ডির নিজ বাসভবনে কাটে সাবেক এই বিচারপতির। তাঁর পরিবারে স্ত্রী আয়েশা রহমানসহ শম্পা, রুম্পা ও নীপা তিন সন্তান রয়েছে।