সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা শাহজাহান সিরাজ মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি তিন বার জাসদের মনোনয়নে এবং এক বার বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি সরকারে বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ছিলেন।
Read More News
শাহজাহান সিরাজের মরদেহ আগামীকাল বুধবার সকালে টাঙ্গাইলে নেওয়া হবে। সকাল ১১টায় এলেঙ্গায় এবং বাদজোহর কালিহাতীতে দুটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বাদ এশা গুলশান সোসাইটি মসজিদে জানাজা শেষে তাঁকে বনানী কবরাস্থানে দাফন করা হবে।
শাহজাহান সিরাজের জন্ম ১৯৪৩ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে, তার বাবার নাম আব্দুল গণি মিয়া ও মারহিমা বেগম।ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় শাহজাহান সিরাজের। ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত টাঙ্গাইলের করটিয়া সাদত কলেজ ছাত্র সংসদের দুবার ভিপি ছিলেন তিনি। ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের পর উত্তাল সময়ে ছাত্রলীগের নেতৃপর্যায়ে চলে আসেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের আগে ১৯৭০ সালে তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালের ৩ মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। সেদিন পতাকা উড়িয়েছিলেন রব, আর ইশতেহার পড়েছিলেন শাহজাহান সিরাজ। তখন ছাত্রলীগের ‘চার খলিফা’র একজন ছিলেন তিনি। অন্য তিনজন ছিলেন ডাকসুর তখনকার ভিপি আ স ম আবদুর রব, ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী এবং ডাকসুর তৎকালীন জিএস আবদুল কুদ্দুস মাখন (প্রয়াত)। মুজিব বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন শাহজাহান সিরাজ।
স্বাধীনতার পর রব-সিরাজের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ভাঙন থেকে জাসদ গঠিত হলে সেই দলের সহ সাধারণ সম্পাদক হন শাহজাহান সিরাজ। তখন তাকে কিছু দিন কারাগারেও থাকতে হয়েছিল। পরে এইচ এম এরশাদের সঙ্গে হাত মেলানো নিয়ে রবের সঙ্গে দ্বন্দ্বে আলাদা হয়ে যান শাহজাহান সিরাজ।
গত শতকের ৯০ এর দশকে এসে বিএনপিতে যোগ দেন শাহজাহান সিরাজ। মৃত্যুর সময় দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারে তিনি বন ও পরিবেশমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।